Gender Based Violence Policy Download | Policy No 40

Gender Based Violence Policy Download | Policy No 40

Gender Based Violence Policy | Bangla | Download | Policy No 40

১. ভূমিকা

লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা, যা শুধু ব্যক্তিগত জীবনে নয়, কর্মক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পোশাক শিল্পে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য একটি নিরাপদ এবং সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে এ অবস্থিত পোশাক কারখানাগুলোর জন্য একটি কার্যকরী লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নির্মূল নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন, যা কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, হয়রানি, এবং সহিংসতার প্রতিরোধ ও সমাধান করবে।

 এই নীতিটি কমপ্লায়েন্স বাংলাদেশ . কম । ComplianceBangladesh.com (কোম্পানীর নাম) এর সকল স্তরের কর্মচারীদের জন্য একটি সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এটি কর্মচারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। আমাদের কারখানাটি একটি সুরক্ষিত, সম্মানজনক এবং ন্যায়সঙ্গত কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে সকল কর্মচারী তাদের লিঙ্গের ভিত্তিতে কোনও ধরনের সহিংসতা বা বৈষম্যের শিকার হবে না। এই নীতির অধীনে, সকল কর্মচারীর অধিকার রক্ষা করা হবে এবং প্রতিটি অভিযোগ গোপনীয়তার সাথে এবং যথাযথ গুরুত্বসহকারে পরিচালিত হবে।

২. উদ্দেশ্য

এই নীতির প্রধান উদ্দেশ্য হল একটি সহিংসতামুক্ত, মর্যাদাপূর্ণ এবং লিঙ্গ সমতার উপর ভিত্তি করে নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা এবং তা বজায় রাখা। কারখানার সকল কর্মচারীর প্রতি সম্মান ও ন্যায়সঙ্গত আচরণ নিশ্চিত করা এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধ, সনাক্তকরণ, এবং প্রতিরোধ করা এই নীতির মূল লক্ষ্য। এই নীতি কারখানার ব্যবসায়িক কার্যক্রম, কর্মীদের কর্মদক্ষতা এবং সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এছাড়াও এটি বাংলাদেশের শ্রম আইন এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পরিচালিত একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়।

৩. প্রযোজ্যতা

এই নীতি কারখানার সকল কর্মী, সহকর্মী, ঠিকাদার, সরবরাহকারী, গ্রাহক, দর্শনার্থী, এবং ব্যবসায়িক অংশীদারদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কর্মক্ষেত্রের অভ্যন্তর ও বাহ্যিক সমস্ত কর্মসূচি, কাজের সময়, কর্মস্থল এবং কারখানা সম্পর্কিত যে কোনও কার্যক্রমে এই নীতি কার্যকর থাকবে।

আরও দেখতে পারেন

sedex meaning

Policy No – 17. Trauma Policy

pest control policy

Policy No – 18. Pest Control Policy

Gender Based Violence Policy | Compliance Bangladesh . Com

৪. লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার সংজ্ঞা

লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বলতে এমন কোনও শারীরিক, মানসিক, যৌন বা অর্থনৈতিক কার্যক্রম বোঝায় যা ব্যক্তির লিঙ্গ বা লিঙ্গ পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে বা এমন ঝুঁকি তৈরি করে। এর মধ্যে রয়েছে:

৪.১ শারীরিক সহিংসতা:

শারীরিক আক্রমণ, যেমন মারধর, ধাক্কা, থাপ্পড়, বা হুমকি যা লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে করা হয়। বিস্তারিতঃ

  • সুপারভাইজার কিংবা তার দ্বারা প্ররোচিত হয়ে অন্য শ্রমিক দ্বারা শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হওয়া।
  • যে কোন শারিরীক সংস্পর্শ যার দ্বারা কেউ আঘাত পেতে পারে এবং সেই সকল শান্তি যা অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে।
  • ভারী কাজ নিয়মিতভাবে অর্পন করে শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা।
  • যে কোন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গায়ে হাত তোলা বা প্রহার করা।
  • বন্দি করে রাখা।
  • কান ধরে উঠা-বসা করান।
  • স্বামী বা তার পরিবার কতৃক নির্যাতন করা।
  • এসিড নিক্ষেপ।
  • চুল ধরে টান দেয়া।

৪.২ যৌন হয়রানি:

অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন প্রস্তাব, যৌন ইঙ্গিত, যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চাপ, বা অশীল ভাষা বা আচরণ। হাইকোর্ট এর রায় অনুযায়ী সংজ্ঞাঃ

  • অনাকাঙ্খিত যৌন আবেদনমূলক আচরণ (সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতে) যেমন: শারীরিক স্পর্শ বা এ ধরনের প্রচেষ্টা।
  • প্রশাসনিক, প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বা চেষ্টা করা।
  • যৌন হয়রানী বা নিপীরণমূলক উক্তি এবং অশালীণ অঙ্গভঙ্গি করা।
  • যৌন আবেদন সম্বলিত পর্নোগ্রাফী প্রদর্শন।
  • যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা।
  • যৌন সুযোগ লাভের জন্য অবৈধ আবেদন, যৌন আবেদনমূলক মন্তব্য বা ভঙ্গী;
  • অশালীন ভঙ্গী বা অশালীন ভাষা বা মন্ডব্যের মাধ্যমে উত্যক্ত করা বা অশালীন উদ্দেশ্য পূরণে কোন ব্যক্তির অলক্ষ্যে তার নিকটবর্তী হওয়া বা অনুসরন করা, যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা;
  • চিঠি, টেলিফোন, মোবাইল, এস এম এস, ছবি, নোটিশ, কার্টুন, বেঞ্চ চেয়ার-টেবিল, নোটিশ বোর্ড, অফিস, শ্রেণিকক্ষ, বাথরুমের দেয়ালে যৌন ইঙ্গিতমূলক বা অপমানজনক কোন কিছু লেখা;
  • ব্যাকমেইল অথবা চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারন করা;
  • যৌন হয়রানীর কারণে খেলাধুলা, সাংকৃতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত কার্যµমে অংশগ্রহন থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হওয়া;
  • প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখাত হয়ে হুমকি দেয়া বা চাপ প্রয়োগ করা;
  • ভয় দেখিয়ে বা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বা প্রতারণার মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা।

৪.৩ মানসিক নিপীড়ন:

ব্যক্তির লিঙ্গের কারণে তাকে হুমকি দেওয়া, মানসিক আঘাত করা, বা অপমানজনক মন্তব্য করা। বিস্তারিত:

  • প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে হুমকি দেওয়া;
  • সুপারভাইজার বা সহযোগী শ্রমিকদের কাছ থেকে বৈষম্যমূলক আচরণ, গালাগাল, অশ্রাব্য ভাষার ব্যবহার ইত্যাদি;
  • নারীদের সমালোচনা করা;
  • অন্যের সামনে অপদস্থ করা;
  • ইর্ষা করা;
  • নারীর বংশ তুলে কথা বলা;
  • এক ঘরে করে রাখা;
  • ইচ্ছাকৃত ভাবে কঠিন কাজের দায়িত্ব প্রদান বা কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে হেয় করার প্রবণতা;
  • দলিত সম্প্রদায়ের কাজ ও বংশ তুলে গাল দেয়া;
  • ধর্ম তুলে গাল দেয়া এবং প্রতিহিংসা স্বরূপ কুটুক্তি করা।

৪.৪ অর্থনৈতিক সহিংসতা:

কর্মচারীর লিঙ্গের কারণে তাকে বেতন বা সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা, বা অগ্রগতির প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। বিস্তারিতঃ

  • কর্মক্ষেত্রে যে কোন আচরণের জন্য মজুরী কর্তন বা মজুরী কর্তনের ব্যাপারে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা;
  • আইন সঙ্গত এবং স্বাভাবিক পাওনা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা;
  • ওভারটাইম বন্টনে পক্ষপাতিত্ব;
  • সময়মত বেতন না দেয়া;
  • বেতন আটকানো;
  • বেতন নির্ধারনে বৈষম্য।

 ৪.৫ লিঙ্গ বৈষম্য: লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে অসম আচরণ, যেমন সুযোগ না দেওয়া, বেতন বৈষম্য, বা পদন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য।

৫. লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি

কমপ্লায়েন্স বাংলাদেশ . কম । ComplianceBangladesh.com (কোম্পানীর নাম) লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করে। যে কোনও ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা এই নীতির লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সতর্কতা, সাময়িক বরখাস্ত, বা কর্মচ্যুতি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

৬. অভিযোগ জানানো এবং রিপোর্ট করার পদ্ধতি

কর্মীদের জন্য নিরাপদ, সহজ এবং গোপনীয় উপায়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার অভিযোগ জানানো এবং রিপোর্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে। অভিযোগ জানানোর পদ্ধতিগুলো হলো:

৬.১ গোপনীয় হটলাইন:

একটি গোপনীয় হটলাইন, যা কর্মচারীরা সরাসরি ব্যবহার করে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

৬.২ অভিযোগ বাক্স:

কারখানার বিভিন্ন স্থানে রাখা গোপন অভিযোগ বাক্সে কর্মীরা লিখিত অভিযোগ জমা দিতে পারবেন।

৬.৩ অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি:

কমিটির কাছে সরাসরি অভিযোগ জানানো যাবে, যারা অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করবেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

৭. অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি

লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং এর বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কারখানার অভ্যন্তরে একটি অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত এবং সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কমিটি গঠন এবং এর কার্যক্রম নিরূপ:

৭.১ কমিটির গঠন

৭.১.১ কমিটির সদস্য সংখ্যা: কমিটিতে মোট ৫-৭ জন সদস্য থাকবে, যাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নারী সদস্য থাকা বাধ্যতামূলক।

৭.১.২ সদস্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া:

  • কমিটি গঠন করা হবে অংশগ্রহণকারী কমিটির সাথে পরামর্শক্রমে।
  • সম্ভব হলে একজন নারী সদস্যকে প্রধান করা হবে, যাতে অভিযোগকারীদের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
  • কর্মচারীদের মধ্যে থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সদস্য নির্বাচন করা হবে।
  • ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকবে যারা অভিযোগের বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করবে।
  • নারী শ্রমিক/কর্মী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তিকে গুরুত্বারোপ করা হবে, যারা নারী কর্মচারীদের পক্ষে অভিযোগের তদন্তে সহযোগিতা করবেন।

৭.২ মিটিংয়ের আয়োজন

অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি নিয়মিত মিটিংয়ের মাধ্যমে কার্যক্রমের পর্যালোচনা করবে। মিটিংয়ের প্রধান বিষয়বস্তু থাকবে:

  • অভিযোগ পর্যালোচনা: পূর্ববর্তী মিটিংয়ের পর পাওয়া অভিযোগ এবং তাদের তদন্তের অগ্রগতি।
  • প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম: কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ।
  • প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম: কর্মীদের জন্য পরিচালিত প্রশিক্ষণ এবং তাদের ফলাফল।
  • নতুন নীতিমালা বা পরিবর্তন: প্রয়োজনীয় নতুন নীতিমালা প্রণয়ন বা বিদ্যমান নীতিমালায় পরিবর্তন।

Gender Based Violence Policy | Compliance Bangladesh . Com

৭.৩ মিটিংয়ের ফ্রিকোয়েন্সি:

প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।

– বিশেষ পরিস্থিতিতে বা জরুরি বিষয়ে অতিরিক্ত মিটিং অনুষ্ঠিত হতে পারে।

৭.৪ মিটিংয়ের নথিবদ্ধকরণ

– প্রতিটি মিটিংয়ের কার্যবিবরণী প্রস্তুত করা হবে, যেখানে আলোচনা করা বিষয়গুলি, সিদ্ধান্ত এবং দায়িত্ব অর্পণের তথ্য থাকবে।

– কার্যবিবরণী গোপনীয়তা রক্ষা করে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হবে এবং পরবর্তী মিটিংয়ে তথ্যের ভিত্তিতে আলোচনা করা হবে।

 ৭.৫ বাৎসরিক রিপোর্ট জমাদান

অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি প্রতি বছর একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবে, যা নিলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করবে:

  • অভিযোগের সংখ্যা: বছরে কতটি অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের ধরন এবং প্রক্রিয়াকরণ।
  • তদন্তের ফলাফল: তদন্তে পাওয়া তথ্য এবং শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিবরণ।
  • প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমের কার্যকারিতা: প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা কার্যক্রমের পরিসংখ্যান এবং কর্মীদের প্রতিক্রিয়া।
  • চ্যালেঞ্জ ও সমস্যাগুলো: কাজের পরিবেশে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে আগত সমস্যাগুলো এবং তাদের সমাধানের পরিকল্পনা।
  • প্রস্তাবনা: ভবিষ্যতের জন্য পদক্ষেপ, যেমন নতুন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, নীতিমালা বা প্রক্রিয়া উন্নয়ন।

৭.৬ রিপোর্ট জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া

  • বাৎসরিক রিপোর্টের প্রস্তুতি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
  • রিপোর্টটি কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং মানবসম্পদ বিভাগে জমা দেওয়া হবে।
  • ব্যবস্থাপনার কাছে রিপোর্ট উপস্থাপন করার সময়, কমিটি রিপোর্টের প্রধান পয়েন্টগুলোর উপর আলোচনা করবে এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করবে।

৭.৭ প্রতিবছর পর্যালোচনা

প্রতিবছর রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর, অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি তার কার্যক্রম এবং নীতিমালাগুলোর পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনে সংশোধনীর প্রস্তাবনা দেবে।

এই প্রক্রিয়া কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কমিটির কার্যকারিতা এবং সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

 ৭.৮ কমিটির দায়িত্ব ও কর্তব্য

৭.৮.১ অভিযোগ গ্রহণ:

– গোপনীয় হটলাইন, অভিযোগ বাক্স, বা সরাসরি অভিযোগ জমা দেওয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত অভিযোগ গ্রহণ এবং তা নিবন্ধন করা।

– লিখিত ফরমেট ব্যবহার করা ও অভিযোগকারীর স্বাক্ষর নেয়া।

– মৌখিক অভিযোগের বিস্তারিত বর্ননা ফরমেট অনুযায়ী পূরণ করা ও অভিযোগকারীর স্বাক্ষর নেয়া।

 ৭.৮.২ লঘু হয়রানী:

লঘু হয়রানীর ক্ষেত্রে যদি সম্ভব হয়, অভিযোগ কমিটি সংশি-ষ্ট উভয় পক্ষের সম্মতি নিয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিবে এবং এ বিষয়ে কর্মক্ষেত্রের সংশি-ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

 ৭.৯ তদন্ত প্রক্রিয়া

প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালিত হবে। এই প্রক্রিয়াটি গোপনীয় এবং দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা হবে। তদন্ত প্রক্রিয়ার ধাপগুলো হলো:

 ৭.৯.১ অভিযোগের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ প্রাপ্তির ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা গ্রহণ করা হবে।

৭.৯.২ তদন্ত কমিটি গঠন: অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটি একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি হিসেবে, যা মানবসম্পদ, আইন এবং লিঙ্গ সচেতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত, তারা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

৭.৯.৩ তদন্ত পরিচালনা:

  • অভিযোগকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করে তদন্ত পরিচালনা করা হবে, যেখানে অভিযুক্ত, অভিযোগকারী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া হবে।
  • সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
  • সহিংতার ধরন বিবেচনা করে তদন্তকালীন সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করতে পারবে;
  • সাক্ষী, তথ্য-প্রমান, সংশ্লিষ্ট দলিল জোগাড় করা, শুনানী পরিচালনা করা এবং বক্তব্য নোট করে দস্তখত নেয়া;
  • অভিযোগকারীর সাক্ষ্য গ্রহনের সময় এমন কোন প্রস্তাব বা আচরণ করা যাবেনা যা উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপমানজনক এবং হয়রানিমূলক হয় সাক্ষ্য গ্রহনের সময় যথাসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে;
  • জাতীয় আইন, হাইকোর্টের নির্দেশনা ও কারখানার নীতিমালার কি কি ধারা / অংশ কি লংঘিত হয়েছে তা চিহ্নিত করা।

 ৭.১০ সমাধান, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসন:  তদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যা সতর্কতা, সাময়িক বরখাস্ত বা স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতির মধ্য দিয়ে হতে পারে।
  • যদি উক্ত অভিযোগ দন্ডবিধির যে কোন ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ফৌজদারী আইনের আশ্রয় নিতে হবে যা পরবর্তীতে সংশি-ষ্ট আদালতে বিচার হবে।
  • ভুক্তভোগীর জন্য মানসিক এবং আইনগত সহায়তা প্রদান করা হবে।

৭.১১ রিপোর্ট প্রদান:

  • তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করা হবে। প্রয়োজনে এই সময়সীমা ৬০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে, তবে এর জন্য যথাযথ কারণ থাকতে হবে।
  • রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৭.১৩ মিথ্যা অভিযোগ:

যদি এটা প্রমানিত হয় যে, উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে মিথ্যা মামলা / অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তাহলে সংশি-ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগকারীর বিরূদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হবে। অভিযোগ কমিটি বেশিরভাগ সদস্য যে সিদ্ধান্ত দিবে তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

৮. প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম:

  • কর্মীদের লিঙ্গ সংবেদনশীলতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
  • কমিটি কর্মক্ষেত্রে সম্মানজনক পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করবে এবং অভিযোগের সংখ্যা হ্রাসের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৯. কমিটির স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তা

কমিটি তার কার্যক্রমে সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকবে এবং সকল তদন্ত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া গোপনীয়ভাবে পরিচালিত হবে। অভিযোগকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রতিশোধমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ কমিটির অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে।

 ১০. নিয়মিত পর্যালোচনা ও রিপোর্টিং

অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট কমিটির কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্তগুলো নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা হবে, এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

 ১১. ভুক্তভোগীর সহায়তা

ভুক্তভোগীদের জন্য সহায়তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা তাদের মানসিক, শারীরিক এবং আইনি সহায়তা প্রদান করবে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা: পেশাদার মানসিক সেবা প্রদান করা হবে।
  • চিকিৎসা সহায়তা: শারীরিক আঘাতের ক্ষেত্রে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।
  • আইনি সহায়তা: ভুক্তভোগীদের জন্য আইনি পরামর্শ এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা প্রদান করা হবে।
  • কাজের পরিবেশে পরিবর্তন: প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মস্থলের পরিবর্তন বা অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১২. প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা কার্যক্রম

কারখানার সকল কর্মচারীর জন্য লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা হবে। এই প্রশিক্ষণের মধ্যে থাকবে:

  • লিঙ্গ সংবেদনশীলতা প্রশিক্ষণ: কর্মীদের মধ্যে লিঙ্গ সমতা, সহিংসতা প্রতিরোধ, এবং সম্মানজনক আচরণের ধারণা গড়ে তোলা।
  • বাইস্ট্যান্ডার প্রশিক্ষণ: কর্মীরা কীভাবে সহিংসতা বা হয়রানি প্রত্যক্ষ করলে সঠিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারেন সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান।
  • ব্যবস্থাপক এবং সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ: ব্যবস্থাপক এবং সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে, যাতে তারা অভিযোগ পরিচালনা এবং নীতি বাস্তবায়নে দক্ষ হতে পারেন।
  • জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা নিরসন দিবস পালন: জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত প্রতি বৎসর ২৫ নভেম্বর থেকে পরবর্তী ১৬ দিনের মধ্যে যে কোন একদিন ‘কর্মক্ষেত্রে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা নিরসন দিবস’ পালন উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী গ্রহন করা এবং বাস্তবায়ন করা।

১৩. নজরদারি ও মূল্যায়ন

এই নীতির কার্যকারিতা নিয়মিত মূল্যায়ন করা হবে। মানবসম্পদ বিভাগ একটি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া প্রণয়ন করবে, যা নীতির বাস্তবায়ন, কর্মচারীদের অভিযোগের সংখ্যা, এবং তদন্ত প্রক্রিয়ার সময়সীমা মূল্যায়ন করবে। প্রতিবছর নীতির কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হবে, এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।

১৪. প্রতিশোধের বিরুদ্ধে নীতি

এই নীতির অধীনে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কোন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। যে কোনো প্রতিশোধমূলক কর্মকর্তা যেমন পদাবনতি, বেতন কাটা, বা অন্যায্য আচরণের জন্য শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কর্মীরা নির্ভয়ে অভিযোগ করতে এবং অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন।

 ১৫. দায়িত্ব ও কর্তব্য

  • ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ: এই নীতির কার্যকরী বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা মুক্ত একটি কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার জন্য ব্যবস্থাপনা দল দায়বদ্ধ থাকবে।
  • সুপারভাইজার এবং ব্যবস্থাপক: সুপারভাইজার এবং ব্যবস্থাপকদের দায়িত্ব থাকবে অভিযোগের দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করা এবং কর্মক্ষেত্রে সম্মানজনক পরিবেশ বজায় রাখা।
  • কর্মী: কর্মীরা এই নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করবেন এবং কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটলে তা রিপোর্ট করবেন।

১৬. আইনগত কাঠামো

এই নীতি বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিক আইন যেমন বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ ও বিধি-২০১৫, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কনভেনশন নং ১৯০ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রণীত হয়েছে।

Gender Based Violence Policy | Compliance Bangladesh . Com

থাইরয়েড-কি-ভালো-হয়

আসুন একসাথে ভালো কিছু করি

আমাদের নতুন ফেসবুক গ্রুপে, F আইকনে ক্লিক করুন জয়েন হতে । 

আরও নতুন পোস্ট

Security Management Policy Download

security management policy | Bangla | Download | Policy No 39উদ্দেশ্যঃ নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি একটি ফ্যাক্টরীর জন্য বিশেষ করে শিল্প কারখানার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পোষাক শিল্প ফ্যাক্টরীর নিরাপত্তা বলতে বুঝায় শ্রমিক/ কর্মচারী/ ভিজিটর বা পরিদর্শক আসা যাওয়ার...

read more

Diciplinary action policy | Bangla | Download

Diciplinary action policy | Bangla | Download | Policy No 38ভ‚মিকাঃ কমপ্লায়েন্স বাংলাদেশ . কম । ComplianceBangladesh.com (কোম্পানীর নাম) এ কর্মরত সকল মানব সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা এবং যেকোন শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের প্রতি কোন ধরণের অন্যায়, অবিচার বা অমানবিক...

read more

৩০ টি কমপ্লাইন্স নীতিমালা গার্মেন্টস/ কারখানার জন্য

৩০ টি কমপ্লাইন্স নীতিমালা গার্মেন্টস/ কারখানার জন্য1. Recruitment Policy: https://compliancebangladesh.com/recruitment-policy/ 2. Factory COC: https://compliancebangladesh.com/factory-code-of-conduct-coc-policy/ 3. Pregnancy test policy:...

read more

About The Author

Rakib Sarowar

Rakib Sarowar is the founder and lead author of the Compliance Bangladesh. His passion for helping people in all aspectes of Compliance Related Issues. He is very keen to learn new things, especially Technology. In addition to write for CB, Rakib also engage as a Central Manager- Compiance & Industrial Safety in a multinational RMG complany.

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

53
Bangladesh Labour Law | Q4

ধারা ১৯, ২০ অথবা ২৩ এর অধিনে ক্ষতিপূরন অথবা ধারা ২২, ২৩, ২৬ অথবা ২৭ এর অধিনে মজুরী হিসাবের প্রয়োজনে “মজুরী” বলিতে কোন শ্রমিকের ছাঁটাই, বরখাস্থ, অপসারণ, ডিসচার্জ, অবসার গ্রহণ বা চাকুরীর অবসানের  অব্যহিত পূবের্র বার মাসের প্রদত্ত তাহার মূল মজুরী এবং মহার্ঘ ভাতা এবং এডহক বা অন্তর্বতী মজুরী, যদি থাকে, এর গড় বুঝাইবে।

আমাদের সাথে থাকুন