কারখানায় লাইসেন্স ব্যতীত কতটুকু ডিজেল মজুদ করা যায়

কারখানায় লাইসেন্স ব্যতীত কতটুকু ডিজেল মজুদ করা যায়

কারখানায় লাইসেন্স ব্যতীত কতটুকু ডিজেল মজুদ করা যায়

কারখানায় লাইসেন্স ব্যতীত কতটুকু ডিজেল মজুদ করা যায়

পেট্রোলিয়াম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য একটি জ্বালানি। এটি পরিবহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প কারখানা এমনকি গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে পেট্রোলিয়াম দাহ্য পদার্থ হওয়ায় এর সংরক্ষণ ও ব্যবহারে আইনগত বিধিনিষেধ রয়েছে। বাংলাদেশে রেফারেন্স পেট্রোলিয়াম আইন ২০১৬ অনুসারে পেট্রোলিয়ামকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে এবং সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মাবলি অনুসরণ করতে হয়।

পেট্রোলিয়ামের শ্রেণিবিন্যাস

বাংলাদেশে আইন অনুযায়ী পেট্রোলিয়ামকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা ফ্ল্যাশ পয়েন্ট (জ্বলনাঙ্ক) বা Flash Point এর ওপর নির্ভরশীল।

  1. প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম (Class-A Petroleum)

    • ফ্ল্যাশ পয়েন্ট: ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।

    • এটি সবচেয়ে দাহ্য এবং ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি।

    • উদাহরণ: পেট্রোল (Petrol), এয়ার ফুয়েল (Aviation Fuel) ইত্যাদি।

  2. দ্বিতীয় শ্রেণির পেট্রোলিয়াম (Class-B Petroleum)

    • ফ্ল্যাশ পয়েন্ট: ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৬১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

    • প্রথম শ্রেণির তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ।

    • উদাহরণ: কেরোসিন (Kerosene)।

  3. তৃতীয় শ্রেণির পেট্রোলিয়াম (Class-C Petroleum)

    • ফ্ল্যাশ পয়েন্ট: ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি।

    • দাহ্যতা সবচেয়ে কম।

    • উদাহরণ: ডিজেল (Diesel), ফার্নেস অয়েল ইত্যাদি।

পেট্রোলিয়াম আইন, ২০১৬

দ্বিতীয় অধ্যায় | পেট্রোলিয়ামের উপর নিয়ন্ত্রণ | কতিপয় ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রয়োজন হইবে না

ধারা ৬।

এই অধ্যায়ে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিম্ন বর্ণিত ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রয়োজন হইবে না, যথা :-

 (ক) অনধিক ২০০০ (দুই হাজার) লিটার পরিমাণ দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পেট্রোলিয়াম মজুদ বা পরিবহন :
 তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত পেট্রোলিয়াম ১০০০ (এক হাজার) লিটার বা উহার কম ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পাত্রে সংরক্ষণ (contain) করিতে হইবে;
 
 (খ) বিক্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যতীত অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লিটার পরিমাণ প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম মজুদ, পরিবহন বা আমদানি:
 তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত পেট্রোলিয়াম দৃঢ়ভাবে মুখ বন্ধ কোনো প্লাস্টিক, পাথর বা ধাতব পাত্রে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুযায়ী সংরক্ষণ করিতে হইবে, যথা:-
 
 (অ) প্লাস্টিক বা পাথরের পাত্রের ক্ষেত্রে ১ (এক) লিটার, এবং
 (আ) ধাতব পাত্রের ক্ষেত্রে ২৫ (পঁচিশ) লিটার, পরিমাণের অধিক হইবে না;
 (গ) বাহক (carrier) হিসাবে Railways Act, 1890 (Act No. IX of 1890) এর section 3 এর sub-section (6) এ সংজ্ঞায়িত railway administration এর হেফাজতে (possession) রাখা পেট্রোলিয়াম আমদানি বা পরিবহন।

Source Link: Laws of Bangladesh

পেট্রোলিয়াম মজুদ/ ডিজেল মজুদঃ

বিক্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যতীত অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লিটার পরিমাণ প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম মজুদ এবং ২০০০ লিটার বা তার কম ২য় ও ৩য় শ্রেণীর পেট্রোলিয়াম মজুরদের জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজন হয় না

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত পেট্রোলিয়াম ১০০০ (এক হাজার) লিটার বা উহার কম ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পাত্রে সংরক্ষণ (Contain) করিতে হইবে।

 

তাই অন্যান্য শর্ত মেনে, কারখানায় – ৩য় শ্রেণীর পেট্রোলিয়াম হিসেবে – ডিজেল; ২০০০ লিটারের কম মজুদ করা যাবে কোন লাইসেন্স না নিয়েই।

পেট্রোলিয়াম আমাদের অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই পেট্রোলিয়ামের শ্রেণিবিন্যাস, সংরক্ষণ শর্ত ও আইন সম্পর্কে সচেতন থাকা সবার জন্য জরুরি।

আরও নতুন পোস্ট

শ্রম আইন অনুযায়ী – একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজের অনুমতি

শ্রম আইন অনুযায়ী – একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজের অনুমতি

আজ আমরা জানবো – বাংলাদেশ শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা অনুযায়ী, একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজের অনুমতি প্রদানে শর্ত সর্ম্পকে ।

read more
মহিলা শ্রমিকদের রাত ১০টার পর কাজ – বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী নির্দেশনা

মহিলা শ্রমিকদের রাত ১০টার পর কাজ – বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী নির্দেশনা

আজ আমরা আলোচনা করবো, বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী – মহিলা শ্রমিকদের রাত ১০টার পর কাজ করার নির্দেশনা কি?

read more
উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কর্মীরা কী ক্ষতিপূরণ পাবেন?

উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কর্মীরা কী ক্ষতিপূরণ পাবেন?

উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কর্মীরা কী ক্ষতিপূরণ পাবেন?উৎসব ছুটির দিনে কাজ করলে কর্মীরা কী ক্ষতিপূরণ পাবেন?বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনও কর্মী যদি উৎসব ছুটির দিনে (যেমন ঈদ, পূজা, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ইত্যাদি) কাজে নিযুক্ত হন, তাহলে তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার...

read more

শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগ পত্র , পরিচয় পত্র এবং সার্ভিস বই

শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র এবং সার্ভিস বই  আমাদের ধারাবাহিক ব্লগ - " শ্রম আইন নিয়ে একটু খানি আলোচনা " । যেখানে শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করা হয়।আমার লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, বিধিমালা ২০১৫ এবং (সংশোধন) আইন, ২০১৮ এর আইন গুলো এক সাথে করে (merge)...

read more
আসুন জেনে নেই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ কৌশল কি কি । পর্বঃ ৭

আসুন জেনে নেই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ কৌশল কি কি । পর্বঃ ৭

আসুন জেনে নেই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ কৌশল | পর্বঃ ৭আসুন জেনে নেই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ কৌশলকর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশগত বিপদের ঝুঁকি প্রতিরোধ করাই মূল লক্ষ্য। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রণ কৌশলগুলোর একটি গঠনমূলক কাঠামো রয়েছে, যা “Hierarchy of Controls” নামে...

read more
ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন । ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা | পর্বঃ ৬

ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন । ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা | পর্বঃ ৬

ঝুঁকি বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই ব্লগে শিখুন কীভাবে সম্ভাব্যতা ও প্রভাব বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করবেন, এবং ঝুঁকি রেটিং মেট্রিক্স ব্যবহার করবেন।

read more
এই প্রথম Compliance Bangladesh Dot Com এ ভিজিট করছেন?

আমাদের আছে সোশাল, সিটিপ্যাট, এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স এর বৃহৎ আর্কাইভ।

চলুন মেইন পেজ যাই  আর সব টপিকগুলো দেখি

মেইন পেজ

About The Author

Rakib Sarowar

Rakib Sarowar is the founder and lead author of the Compliance Bangladesh. His passion for helping people in all aspectes of Compliance Related Issues. He is very keen to learn new things, especially Technology. In addition to write for CB, Rakib also engage as a Central Manager- Compiance & Industrial Safety in a multinational RMG & Sourcing complany.

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমাদের সাথে থাকুন