পর্বঃ ০২ । রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ধরণসমূহ

রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ধরণসমূহ: সাধারণ, ফায়ার, কেমিক্যাল পরিবেশগত মূল্যায়ন

রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের ধরণসমূহ: সাধারণ, ফায়ার, কেমিক্যাল পরিবেশগত মূল্যায়ন

প্রতিটি কর্মস্থল, বিশেষ করে উৎপাদন এবং শিল্প কারখানায় বিভিন্ন ধরণের ঝুঁকি বিদ্যমান। এই ঝুঁকিগুলোর প্রকারভেদ অনুযায়ী আলাদা আলাদা রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট প্রয়োজন হয়। কারণ প্রতিটি ঝুঁকির ধরন, তার সম্ভাব্যতা এবং প্রতিরোধের কৌশল ভিন্ন হয়।

এই ব্লগে আমরা জানবো রিস্ক অ্যাসেসমেন্টের চারটি মূল ধরণ সম্পর্কে:

১। সাধারণ রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট

২। ফায়ার রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট

৩। কেমিক্যাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট

৪। পরিবেশগত রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট

১। সাধারণ রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট । সকল এরিয়া/ সেকশনের রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (General Risk Assessment for all area/ sections)

সংজ্ঞা:
যেকোনো কাজ, যন্ত্রপাতি বা পরিবেশে বিদ্যমান ঝুঁকির একটি প্রাথমিক ও সার্বিক মূল্যায়ন।

উদাহরণ:

  • সিঁড়িতে পানি পড়ে থাকলে পিছলে পড়ার ঝুঁকি
  • যন্ত্রপাতিতে গার্ড না থাকলে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা
  • শব্দদূষণের কারণে দীর্ঘমেয়াদি শ্রবণ সমস্যা

লক্ষ্য:
সাধারণ কাজের সময় কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

২।ফায়ার রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Fire Risk Assessment)

সংজ্ঞা:
প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগার সম্ভাব্য উৎস, আগুন ছড়িয়ে পড়ার পথ এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি মূল্যায়ন করাই এর উদ্দেশ্য।

উদাহরণ:

  • বৈদ্যুতিক তারের ত্রুটি
  • কেমিক্যাল স্টোরেজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ না থাকা
  • জরুরি এক্সিট ব্লক থাকা

মূল ধাপ:

  • আগুন লাগার উৎস চিহ্নিত করা
  • জ্বালানির উৎস ও অক্সিজেন উপস্থিতি বিশ্লেষণ
  • অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ও প্রশিক্ষণ পর্যালোচনা
  • ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্ল্যান

৩️। কেমিক্যাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Chemical Risk Assessment)

সংজ্ঞা:
কর্মস্থলে ব্যবহৃত যেকোনো রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ঝুঁকি মূল্যায়ন।

উদাহরণ:

  • অ্যাসিড বা ক্ষারিক দ্রব্যের ব্যবহার
  • ইনহেলেশন বা ত্বকে লাগার সম্ভাবনা
  • রাসায়নিক মিশ্রণে বিস্ফোরণের ঝুঁকি

মূল বিবেচ্য বিষয়:

  • MSDS (Material Safety Data Sheet) বিশ্লেষণ
  • ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি
  • PPE ব্যবহার
  • কেমিক্যাল স্টোরেজ ও ডিসপোজাল

৪️। পরিবেশগত রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট (Environmental Risk Assessment)

সংজ্ঞা:
কারখানা বা কার্যক্রম থেকে পরিবেশের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ ও নিয়ন্ত্রণের কৌশল।

উদাহরণ:

  • বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনা
  • পানি বা বায়ু দূষণ
  • শব্দ ও আলো দূষণ

মূল লক্ষ্য:
স্থায়িত্বশীল উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ।

🧾 তুলনামূলক চার্ট

ধরণউদ্দেশ্যমূল ঝুঁকিউদাহরণ
সাধারণকর্মী সুরক্ষাযন্ত্রপাতি, পরিবেশপিছলে পড়া
ফায়ারআগুন প্রতিরোধবৈদ্যুতিক ত্রুটি, কেমিক্যালইমার্জেন্সি এক্সিট ব্লক
কেমিক্যালরাসায়নিক নিরাপত্তাইনহেলেশন, স্কিন বার্নঅ্যাসিড ব্যবহারে PPE
পরিবেশগতপরিবেশ সুরক্ষাবর্জ্য, দূষণদূষিত পানি নির্গমন

উপসংহার

রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট একটি একক পদ্ধতি নয়, বরং এটি বিভিন্ন পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

সঠিক ধরণের রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট নির্বাচন ও বাস্তবায়ন করলে শুধুমাত্র কর্মীর নিরাপত্তাই নিশ্চিত হয় না, বরং একটি টেকসই ও আইনি মানসম্মত প্রতিষ্ঠান গঠন সম্ভব হয়।

 

 

আরও নতুন পোস্ট

এই প্রথম Compliance Bangladesh Dot Com এ ভিজিট করছেন?

আমাদের আছে সোশাল, সিটিপ্যাট, এনভায়রনমেন্টাল কমপ্লায়েন্স এর বৃহৎ আর্কাইভ।

চলুন মেইন পেজ যাই  আর সব টপিকগুলো দেখি

মেইন পেজ

About The Author

Rakib Sarowar

Rakib Sarowar is the founder and lead author of the Compliance Bangladesh. His passion for helping people in all aspectes of Compliance Related Issues. He is very keen to learn new things, especially Technology. In addition to write for CB, Rakib also engage as a Central Manager- Compiance & Industrial Safety in a multinational RMG complany.

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

28
MCQ 05

কোন পরিস্থিতিতে একটি প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন করা বাধ্যতামূলক?

আমাদের সাথে থাকুন